ঢাকাসোমবার , ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  1. অপরাধ
  2. অর্থনীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আরো
  6. ইসলামিক
  7. কবিতা
  8. কৃষি সংবাদ
  9. ক্যাম্পাস
  10. খাদ্য ও পুষ্টি
  11. খুলনা
  12. খেলাধুলা
  13. চট্টগ্রাম
  14. ছড়া
  15. জাতীয়
আজকের সর্বশেষ সবখবর

যেভাবে নিজ আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে সফলকাম হওয়া যায়

কালের কথা
সেপ্টেম্বর ১১, ২০২৩ ৫:৩১ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

ধর্ম ডেস্ক :
ইমাম ইবনে তাইমিয়া রহ. বলেন :
পরহেযগারি, তাকওয়া ও সৎকাজ মানুষের আত্মাকে বিস্তৃত করে এবং বক্ষকে প্রসারিত করে। মানুষ তার আত্মার মধ্যে প্রশস্ততা ও বিস্তৃতি খুঁজে পায়। পাপাচার ও কৃপণতা মানুষের আত্মাকে সংকীর্ণ করে তোলে, সঙ্কুচিত করে তোলে এবং হীন বানিয়ে দেয়। কৃপণ পাপাচারী আত্মাকে তার বাহক দেহের ভেতর চূর্ণবিচূর্ণ করে, পদদলিত করে। এ-কারণেই মৃত্যুর সময় পাপাচারী আত্মাকে তার মালিকের দেহ থেকে এমনভাবে বের করা হয় যেভাবে ভেজা পশম থেকে লোহার শিক বের করা হয়।

আর পরিচ্ছন্ন, পবিত্র ও পরহেযগার আত্মা—যাকে তার মালিক পরিশুদ্ধ করেছে—উচ্চস্তর, উদারতা ও মর্যাদা লাভ করে এবং শেষ্ঠত্ব অর্জন করে। মৃত্যুর সময় দেহ থেকে এই আত্মাকে ওইভাবেই বের করা হয় যেভাবে পানির পাত্রের মুখ থেকে পানির ফোঁটা ঝরে পড়ে এবং খামিরা থেকে পশম টেনে বের করা যায়।
রেফারেন্স- মাজমুউল ফাতাওয়া : ১০ম খণ্ড, পৃষ্ঠা ৬৩০।

আত্মাকে কলুষমুক্ত করার উপায় সমূহ

‘সফল হয় সেই ব্যক্তি যে তার আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে’। ‘এবং ব্যর্থ হয় সেই ব্যক্তি যে তার আত্মাকে কলুষিত করে’ (সুরা আশ শামস: ৯১/৯-১০)।

ইতিপূর্বে বর্ণিত সূর্য, চন্দ্র, দিবস, রাত্রি, আকাশ, পৃথিবী ও মানুষসহ আটটি সৃষ্টবস্ত্তর শপথ করার পর সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ উপরোক্ত কথা বলেছেন। এর দ্বারা তিনি অত্যন্ত জোরালোভাবে একথা বুঝাতে চেয়েছেন যে, পবিত্র আত্মার লোকেরাই পৃথিবীতে সফলকাম এবং কলুষিত আত্মার লোকেরা সর্বদা ব্যর্থকাম। তাদের বাহ্যিক পোষাক-পরিচ্ছদ যতই পবিত্র হৌক এবং সামাজিক মর্যাদা যতই উন্নত হৌক। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,
إِنَّ اللهَ لاَ يَنْظُرُ إِلَى صُوَرِكُمْ وَأَمْوَالِكُمْ وَلَكِنْ يَنْظُرُ إِلَى قُلُوبِكُمْ وَأَعْمَالِكُمْ
‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের চেহারা বা মালের দিকে দেখেন না। বরং তিনি দেখেন তোমাদের অন্তর ও আমলের দিকে’।[মুসলিম হা/২৫৬৪; মিশকাত হা/৫৩১৪]

উপরোক্ত আয়াতে বর্ণিত ‘তাযকিয়া’ (الةزكية) অর্থ التزكية من الشرك وشوائب المعاصي ‘শিরক ও পাপের কালিমাসমূহ হ’তে পবিত্র হওয়া’। যেমন অন্যত্র আল্লাহ বলেন, قَدْ أَفْلَحَ مَنْ تَزَكَّى ‘সফলকাম হ’ল সেই ব্যক্তি যে আত্মশুদ্ধি অর্জন করল’ (আ‘লা ৮৭/১৪)।
মূলতঃ নবী প্রেরণের উদ্দেশ্যই ছিল মানুষকে পরিশুদ্ধ করা। যেমন আল্লাহ বলেন,
هُوَ الَّذِي بَعَثَ فِي الْأُمِّيِّينَ رَسُولاً مِنْهُمْ يَتْلُو عَلَيْهِمْ آيَاتِهِ وَيُزَكِّيهِمْ وَيُعَلِّمُهُمُ الْكِتَابَ وَالْحِكْمَةَ وَإِنْ كَانُوا مِنْ قَبْلُ لَفِي ضَلاَلٍ مُبِينٍ- وَآخَرِينَ مِنْهُمْ لَمَّا يَلْحَقُوا بِهِمْ وَهُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ ‘
তিনিই সেই সত্তা, যিনি উম্মীদের মধ্যে তাদেরই মধ্য হ’তে একজনকে রাসূল হিসাবে প্রেরণ করেছেন। যিনি তাদের নিকট তাঁর আয়াতসমূহ পাঠ করেন এবং তাদেরকে পরিশুদ্ধ করেন। আর তিনি তাদেরকে কুরআন ও সুন্নাহ শিক্ষা দেন। যদিও তারা ইতিপূর্বে স্পষ্ট ভ্রান্তির মধ্যে ছিল’। ‘এবং এটা তাদের জন্যেও যারা এখনো তাদের সাথে মিলিত হয়নি। আর আল্লাহ মহাপরাক্রান্ত ও প্রজ্ঞাময়’ (সুরা জুম‘আহ ৬২/২-৩)।

অত্র আয়াতদ্বয়ে প্রমাণিত হয় যে, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাঁর যুগের ও পরবর্তী যুগে কিয়ামত পর্যন্ত আগত সকল আদম সন্তানের আত্মশুদ্ধির জন্য প্রেরিত হয়েছেন। আর সেই আত্মশুদ্ধির মাধ্যম হ’ল পবিত্র কুরআন ও ছহীহ সুন্নাহ। আর তার ভিত্তিতে যথার্থ ইলম ও আমলের মাধ্যমে বাহ্যিক ও আভ্যন্তরীন শুদ্ধিতা অর্জন করা।

দ্বিতীয় আয়াতে এর বিপরীত বর্ণনা এসেছে যে, ব্যর্থকাম হ’ল সেই ব্যক্তি যে তার আত্মাকে কলুষিত করে’। অর্থাৎ যারা কুরআন ও সুন্নাহর বাইরে গিয়ে সাফল্য তালাশ করে, তারা শয়তানের খপপরে পড়ে নিজেকে কলুষিত করে ফেলে। ক্বাতাদাহ ও অন্যান্য বিদ্বানগণ বলেন, خاب من دس نفسه في المعاصي ‘ঐ ব্যক্তি নিরাশ হয়েছে, যার আত্মা পাপে ডুবে গেছে’ (কুরতুবী)।

যেমন আল্লাহ অন্যত্র বলেন,
بَلَى مَنْ كَسَبَ سَيِّئَةً وَأَحَاطَتْ بِهِ خَطِيئَتُهُ فَأُولَئِكَ أَصْحَابُ النَّارِ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ
‘হ্যাঁ, যে ব্যক্তি পাপ অর্জন করেছে ও সে পাপ তাকে বেষ্টন করে ফেলেছে, তারাই জাহান্নামের অধিবাসী। তারা সেখানে চিরকাল থাকবে’ (বাক্বারাহ ২/৮১)।

আত্মশুদ্ধির উপায় সমূহ :
(১) সর্বাবস্থায় আল্লাহকে ভয় করা : আল্লাহ মানুষের ও বিশ্বচরাচরের সৃষ্টিকর্তা ও পালনকর্তা, তিনিই আমাদের রূযীদাতা, রোগ ও আরোগ্যদাতা, জীবন ও মরণদাতা, এ বিশ্বাস দৃঢ়ভাবে পোষণ করা। তিনি যেমন মহা ক্ষমাশীল, তেমনি দ্রুত প্রতিশোধ গ্রহণকারী, এ আকাংখা ও ভয় সর্বদা লালন করা। সাথে সাথে প্রতিটি কর্মের হিসাব আল্লাহর কাছে দিতে হবে, সর্বদা এ দায়িত্বানুভূতি জাগরুক থাকা। আল্লাহ বলেন, وَلِمَنْ خَافَ مَقَامَ رَبِّهِ جَنَّتَانِ ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সম্মুখে দন্ডায়মান হওয়াকে ভয় করে, তার জন্য রয়েছে দু’টি জান্নাত’ (আর-রহমান ৫৫/৪৬)।
তিনি বলেন, إِنَّ اللهَ مَعَ الَّذِينَ اتَّقَوْا وَالَّذِينَ هُمْ مُحْسِنُونَ
‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাদের সাথে থাকেন যারা আল্লাহভীরু এবং যারা সৎকর্মশীল’ (নাহল ১৬/১২৮)।
অর্থাৎ যারাই আল্লাহভীরু তারাই সৎকর্মশীল। এর বিপরীত হওয়া সম্ভব নয়। অত্র আয়াতে আরেকটি বিষয়ে ইঙ্গিত রয়েছে যে, আল্লাহভীরুতা প্রমাণিত হবে কর্মের মাধ্যমে, কেবল কথার মাধ্যমে নয়।

(২) সকল ক্ষেত্রে অহি-র বিধান মেনে চলা : আল্লাহ বলেন, وَمَا آتَاكُمُ الرَّسُولُ فَخُذُوهُ وَمَا نَهَاكُمْ عَنْهُ فَانْتَهُوا
‘রাসূল তোমাদেরকে যা দেন, তা গ্রহণ করো এবং যা নিষেধ করেন, তা থেকে বিরত থাকো’ (হাশর ৫৯/৭)।
আর তিনি কোন কথা বলেন না আল্লাহর ‘অহি’ ব্যতীত (নাজম ৫৩/৩-৪)।

আল্লাহ বলেন, ‘যে ব্যক্তি রাসূলের আনুগত্য করল, সে আল্লাহরই আনুগত্য করল’ (নিসা ৪/৮০)।
তাই হাদীছ বাদ দিয়ে কুরআন মান্য করার দাবী স্রেফ আত্মপ্রতারণা মাত্র। বস্ত্ততঃ তাঁর আদেশ-নিষেধ মেনে চলার মধ্যেই রয়েছে আত্মাকে কলুষমুক্ত রাখার সর্বোত্তম উপায়।

উপরোক্ত উপায় সমূহ অবলম্বন করলে মুমিনগণ তাদের অন্তরজগতকে কলুষমুক্ত রাখতে পারবেন বলে আশা করা যায়।

🖼️ এইচ এম ইব্রাহীম খলীল :
অনার্স (হাদিস) বিভাগ।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
%d bloggers like this: